বিনোদন প্রতিবেদক: শিল্পের অন্যতম ও শক্তিশালী মাধ্যম নৃত্যকলা। বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাস – ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতি যুগে যুগে দৃশ্যমান হয়েছে নৃত্যকলার মাধ্যমে। সভ্যতার সংকট কালে অন্যায়, শোষণ- নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রধান হাতিয়ার হয়েছে নৃত্য, কখনও প্রেম – ভালবাসা ও বিশ্ব সুন্দরের অপরূপ সৃষ্টির সৃজনশীল প্রকাশ ঘটেছে নৃত্যে। শিল্পের অন্যতম ও শক্তিশালী মাধ্যম নৃত্যকলা।

দেশের গৌরবময় ইতিহাস – ঐতিহ্য,শিল্প – সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে নৃত্যশিল্প ও নৃত্যশিল্পীদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এসকল শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন সম্ভাবনাময় তরুণ নৃত্যশিল্পী, যারা নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতায় নিজেদের নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়, একইসাথে বিশ্বের দরবারে সমুন্নত রেখেছে বাংলাদেশকে।

এদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সিনিয়র নৃত্যশিল্পী “শাহনাজ শারমিন অনন্যা “, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও বাংলাদেশ – যুক্তরাজ্য সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ২৬ – ৩১ মার্চ ২০২২,যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘বাংলাদেশ উৎসব’। এই উৎসবে অংশগ্রহণ করছেন শাহনাজ শারমিন অনন্যা। লন্ডনের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে তার সঙ্গে স্বাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন ভোরের পাতা বিনোদন সম্পাদক আল সামাদ রুবেল। সেই বিশ্বজয়ের কথা বলেছেন গুণী এই নৃত্যশিল্পী..।

মুজিব শতবর্ষের কাজের সাথে সেই শুরু থেকে জড়িত থাকার সৌভাগ্য হয়েছে আমার যেটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে। তারপর ২০২১ এ মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও কাজ করেছি আমরা।সর্বশেষ ২০২২ এ টুঙ্গিপাড়ায় অনুষ্ঠিত হল”হৃদয়ে পিতৃভূমি” শীর্ষক অনুষ্ঠান।প্রতি বছরই আমি নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করি এবার ও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এ বছরের কাজটি একটু ভিন্ন ছিল কেননা এটি অনুষ্ঠিত হয় আমাদের জাতির পিতার জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায়।আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি সব সময়ই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। এ ধরনের অনুষ্ঠানে শুধু শিল্পী হিসেবে নয়,দল সমন্বকারি সহ নানা বিষয় দায়িত্ব পালন করতে হয় আমাদের যার ফলে নানাদিক দিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ তৈরি হয়।এ ছাড়াও ২১-২৬ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজিত হচ্ছে”লোকজ মেলা” যার আয়োজন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।বিভিন্ন স্টলের পাশাপাশি সেখানে মঞ্চে প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের শিল্পীদের অংশগ্রহণে মুখরিত হচ্ছে মেলাপ্রাঙ্গণ।

আমি ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং এ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বর্তমানে নৃত্যকলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছি।আমি মনে করি নৃত্যে ব্যবহারিক বিষয়গুলো জানার পাশাপাশি তত্ত্বীয় বিষয়গুলো জানাও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।একজন সমৃদ্ধ নৃত্যশিল্পী হিসেবে নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করছি। এবং স্বপ্ন দেখি নাচ নিয়ে বিশ্বজয় করার। আর নাচ নিয়ে আলাদা করে ভবিষ্যত পরিকল্পনা বলতে চাই না কেননা পুরো জীবনটাই নাচে কাটাতে চাই,নাচেই আমার মুক্তি।

আমি একজন নৃত্যশিল্পী হয়ে যেকোনো দেশে প্রতিনিধিত্ব করা সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে ভালো পারফরম্যান্স করা ও বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস- ঐতিহ্য ও শিল্প-সংস্কৃতিকে ইংল্যান্ডের মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই।

অনন্যা বলেন, মুজিব বর্ষের সুবিশাল কর্মযজ্ঞ আমাদের অনেকবেশি আত্মবিশ্বাসী করেছে। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছি।আমরা প্রতিদিন ৮-১০ ঘন্টা মহড়া করছি।সবাই সবার সর্বোচ্চ দিয়ে চেস্টা করছে। উৎসবের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত আমাদের প্রস্তুতি অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাজ্যে আমরা মোট তিনটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবো।প্রথম দুটি হবে কূটনৈতিক অনুষ্ঠান যার একটি অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনে এবং দ্বিতীয়টি বার্মিংহামে।আর শেষ অনুষ্ঠান টি হচ্ছে বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল যেটি অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনে।